সঠিক উত্তর হচ্ছে: তদ্ভব শব্দ
ব্যাখ্যা: তদ্ভব শব্দঃ
যেসব শব্দ মূল সংস্কৃত অথচ কালক্রমে প্রকৃত ভাষার মধ্যে পড়ে লোকের মুখে বিকৃতপ্রাপ্ত হয়ে রূপ পরিবর্তিত হয়েছে, সেগুলোকে তদ্ভব শব্দ বলে। মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর মতে, “যেসব শব্দ মূল সংস্কৃত ভাষায় পাওয়া যায়, কিন্তু ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তনের ধারায় প্রাকৃতির মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে আধুনিক বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তদ্ভব শব্দ।”
তদ্ভব কথাটির অর্থ তৎ (তা) থেকে ভব (উৎপন্ন) , অর্থাৎ সংস্কৃত শব্দ থেকে উৎপন্ন। বাংলা ভাষা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাকৃত ভাষার মাধ্যমে এগুলো গ্রহন করেছে। ড, এনামুল হকের মতে খ্যাতনামা লেখকদের রচনায় শতকরা ষাট ভাগই তদ্ভব শ্রেণীর অর্ন্তগত। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যাবতীয় নাম, পেশাবাচক শব্দ, পশু-পাখি ও প্রাকৃতিক বস্তুর নাম, ঘর-সংসারের জিনিসপত্র, সংখ্যাবাচক শব্দ, তারিখ, ক্রিয়াবাচক শব্দ, অব্যয় ইত্যাদি অসংখ্য শব্দ তদ্ভব শ্রেণীভূক্ত। এ শব্দগুলো বর্ণবিন্যাসে, বাহ্য আকৃতিতে, উচ্চারণে এবং অনেক ক্ষেত্রে অর্থের দিক থেকে এমনভাবে বিকৃতি প্রাপ্ত হয়েছে যে এগুলো এখন আর সংস্কৃত শব্দ বলে মনে হয় না। যেমন: কর্ণ সংস্কৃত শব্দের প্রকৃত রূপ হচ্ছে কন্ন। এ ‘কন্ন’ শব্দ থেকেই ‘কান’ তদ্ভব শব্দের উৎপত্তি ঘটেছে।