ব্যাঙ উভচর (অ্যাম্ফিবিয়ান) শ্রেণীর অ্যানিউরা (লেজহীন, অ্যান=নাই, ইউরো=লেজ) বর্গের মেরুদণ্ডী প্রাণী। এদের লাফ (দেহের আয়তনের তুলনায় বিশ্বরেকর্ড) ও বর্ষাকালে (প্রজনন ঋতু) ঘ্যাঙর্ ঘ্যাঙ্ ডাক (প্রণয় সম্ভাষণ) বিখ্যাত। অনেক সময় কুনো ব্যাঙ (toad) ও সোনা (কোলা) ব্যাঙ (frog) এই দুরকম ব্যাঙের মধ্যে পার্থক্য করার চেষ্টা করা হয়। কুনো ব্যাঙ শুকনো জায়গায় বেশি থাকে আর কোলা ব্যাঙ আর্দ্র জায়গায় বা জলে বেশি থাকে। কিন্তু বুফোটিডে পরিবার ছাড়া আর কোন ব্যাঙকে কুনো ব্যাঙ বলা হয় না। এগুলো ছাড়াও আরো অনেক রকমের ব্যাঙ রয়েছে, যেমন—ধেড়ে ব্যাঙ, গিরগিটিসদৃশ ব্যাঙ, গোলাপি ব্যাঙ, হলুদ ব্যাঙ, ডারউইন্স ফ্রগ (মেক্সিকান বারোয়িং টোড) ইত্যাদি। ব্যাঙের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে কিছু প্রজাতি নিশাচর আবার কিছু শীতল রক্তবিশিষ্ট। বিজ্ঞানের যে শাখায় উভচর এবং সরিসৃপ প্রাণীদের নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে হারপেটোলজি বলে, আর এসব প্রাণীদের নিয়ে কাজ করেন এমন বিজ্ঞানীদের বলা হয় হারপেটোলজিস্ট। মানুষের খাদ্য তালিকায় ব্যাঙের ভুমিকা রয়েছে। এছাড়াও এর সাহিত্য, প্রতীক এবং ধর্মের মধ্যে অনেক সাংস্কৃতিক ভূমিকা আছে। ব্যাঙের সংস্কৃত নাম দর্দুর যা থেকে বাংলা নাম দাদুর বা দাদুরী এসেছে। আরেক নাম ভেক। এক সময় গ্রামাঞ্চলে, বিশেষ করে চিলি, ঘানা, কোস্টারিকা ও পানামায় ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ দেখা যেত। এখন তাদের বাসস্থানের জায়গা কমেছে, ছত্রাকজনিত বিশেষ ধরনের ভয়াবহ রোগও হানা দিচ্ছে। যার ফলে দিনে দিনে এদের সংখ্যা বিলুপ্তির হুমকির মুখে পড়ছে।