নিচের অপশন গুলা দেখুন
- ১৯৪৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি
- ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ
- ১৯৫০ সালের ১১ মার্চ
- ১৯৫২ সালের ৩১ জানুয়ারি
পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশন শুরু হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি,১৯৪৮। অধিবেশনে কংগ্রেস দলীয় সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ইংরেজি ও উর্দুর সঙ্গে বাংলাকেও গণপরিষদের সরকারি ভাষা করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান। গণপরিষদের অধিবেশনে লিয়াকত আলী খান মন্তব্য করেন যে, যেহেতু পাকিস্তান একটি মুসলিম রাষ্ট্র তাই পাকিস্তানের সরকারি ভাষা মুসলমানের ভাষা হওয়া উচিত। লিয়াকত আলী খান আরও যুক্তি দেন যে, যেহেতু পাকিস্তানের মুসলমানদের সাধারণ ভাষা উর্দু, অতএব উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র সরকারি ভাষা, অন্য কোনো ভাষা নয়। গণপরিষদে অন্যান্য মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাবকে দেশের সংহতি ও অখন্ডতা বিনষ্ট করার প্রয়াস বলে মন্তব্য করেন। গণপরিষদ অধিবেশনে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত আনীত প্রস্তাব ভোটে দেয়া হলে অগ্রাহ্য হয়।
উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রতিবাদে ১৯৪৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালন করা হয়। বাংলা ভাষার সংগ্রামকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ২ মার্চ, ১৯৪৮ ঢাকার ফজলুল হক হলে \'রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ\' (সর্বদলীয়) গঠন করা হয়। পরিষদের আহবায়ক মনোনীত হন - শামসুল আলম।
পরিষদে নিম্নলিখিত সংগঠনের প্রত্যেকটি থেকে দুইজন করে প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যথা: তমাদ্দুন মজলিশ, গণআজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক যুবলীগ, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, ফজলুল হক মুসলিম হল সহ অন্যান্য ছাত্রাবাস, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ এবং ছাত্র ফেডারেশন।
রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ১১ মার্চ, ১৯৪৮ পূর্ব বাংলার সর্বত্র সাধারণ ধর্মঘট আহবান করে। কিন্তু পূর্ববাংলার সরকার বাংলাভাষার আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে প্রচার করে। সরকারী পুলিশ বাহিনী ছাত্রদের মিছিল ও সমাবেশে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুল আলমসহ ৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালের ৩১ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কাজী গোলাম মাহবুবকে আহবায়ক করে \'\'সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ\'\' গঠিত হয়েছিলো।
উৎসঃ নবম - দশম শ্রেণীর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা বই (উন্মুক্ত)