বিভিন্ন চাকরির ভাইভায় একটি কমন প্রশ্ন হলো “আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন! অথবা আপনার নিজের সম্পর্কে ৫টি বাক্য বলুন!” সাধারণত ভাইভার শুরুতেই প্রশ্নকর্তা এধরণের প্রশ্ন করে থাকেন। আর এ প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমেই চাকরিদাতা আপনার সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পেয়ে যান এবং সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন আপনি এ চাকরির জন্য যোগ্য কিনা। তাই এ প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রার্থীকে তার সৃজনী শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। কারণ এখানে প্রশ্নের সঠিক ও ভুল উত্তর নিয়ে ভাবতে হয় না। অত্যন্ত সুন্দর ভাবে দিয়ে নিজের দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। চলুন জেনে নেই কীভাবে এ প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া যায়।
শুধুমাত্র আপনার নিজের সম্পর্কে বলবেন। কোনো অপ্রাসঙ্গিক কথা এখানে বলা যাবেনা। এমন কিছু বলুন যা চাকরিদাতাকে আপনার প্রতি আগ্রহী করে তুলে। এধরণের প্রশ্ন করা হয় সাধারণত প্রার্থী হিসেবে আপনি কতটা যোগ্য তা বুঝতে এবং আপনার উপস্থিত বুদ্ধি ও উপস্থাপন দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য। এ প্রশ্নের উত্তর শুরু করতে পারেন এভাবে-
১. নিজেকে দিয়ে বলা শুরু করবেন। আপনার স্কুল-কলেজ, লেখাপড়া, লেখাপড়ার বিষয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কোন স্কলারশীপ বা অন্য কোন ইভেন্টে প্রথম স্থান অর্জন করে থাকলে তা বলতে পারেন।
২. আপনার যদি কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তা বলতে হবে। সেখানে আপনার দক্ষতা, সাফল্য ও প্রাপ্তি কী ছিল তা তুলে ধরতে হবে এবং অবশ্যই সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে একটি ভালো ফিডব্যাক দিতে হবে।
৩. আপনার যে কোন দুএকটি গুণের কথা বলুন। তবে অবশ্যই সেটা যেন আপনার চাকরির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
৪. আমরা কেউ কিন্তু সর্বজান্তা নই। আমাদের প্রত্যেকের কোন না কোন দুর্বলতা রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার দুর্বলতার কথা বলুন এবং এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে কী কী করছেন তা বলুন।
৫. বক্তব্যটি বেশি দীর্ঘায়িত করবেন না। ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করুন।
উদাহরণ : “ধন্যবাদ স্যার! আমাকে আমার নিজের সম্পর্কে কিছু বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। আমি প্রিতম রায়, কারমাইকেল কলেজ, রংপুর থেকে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছি। সেখানে লেখাপড়া করা অবস্থায় আমি বিতর্ক প্রতিযোগীতা ক্লাবের সদস্য ছিলাম এবং কয়েকবার বিতর্ক প্রতিযোগীতায় প্রথম হয়েছিলাম। লেখাপড়া শেষে আমি বাংলালিক কোম্পানীতে কাস্টমার রিলেশনশীপ অফিসার হিসেবে দুই বছর কাজ করেছি। সেখানে আমি দক্ষতার সাথে আমার কাজ করতে পেরেছি এবং সেখান থেকে আমি শিখেছি কীভাবে টীম ওয়ার্ক করতে হয়, মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করে কীভাবে নিজের কাজের টার্গেট পূরণ করতে হয় এবং কীভাবে মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেওয়া যায়।
এখানে একটি কথা বলতে হয় আমি টিম লিডার হিসেবে অনেক দক্ষ এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে সঠিক সিন্ধান্ত নিতে আমি পারদর্শী। আমি স্পষ্ট কথা বলতে ভালোবাসি। প্রত্যেক মানুষের কিছু দুর্বলতা থাকে। আমিও এর বাইরে নই আমারও কিছু দুর্তবলা রয়েছে, তা হলো আমি সহজে কাউকে না বলতে পারিনা। হোক সেটা কাজের ক্ষেত্রে বা অন্যান্য সাহায্যের ক্ষেত্রে। এর জন্য আমাকে অনেক সময় সহকর্মীদের আবদার রাখতে অনেক পরিশ্রম করতে হয় এবং অন্যান্য সহযোগীতাও করতে হয়। আরও একটি দুর্বলতা বলা যায় আমি ভিষণ কাজ পাগল। কাজ করতে শুরু করলে যতক্ষণ না শেষ হয় ততক্ষণ দিন-রাত, খাওয়া -দাওয়া ভুলে যাই। আমার সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য আমি আবেদন করার সময় সিভিতে উল্লেখ করেছি। ধন্যবাদ স্যার।”
এখানে লেখা দেখে মনে হচ্ছে অনেক কথা। কিন্তু যখন আপনি এগুলো নিজের মত করে বলবেন, তখন দেখবেন ২থেকে ৩ মিনিটের বেশি সময় লাগবে না।