menu search
আমাদের সাইটে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ | প্রশ্ন এবং উত্তর প্রদান করে আমাদের সাইট থেকে আয় করতে পারবেন | তাই দেরি না করে এখনই একাউন্ট করেন |
more_vert
thumb_up_off_alt 0 পছন্দ thumb_down_off_alt 0 জনের অপছন্দ

1 উত্তর

more_vert
পবিত্র কোরআনে কারিমের কয়েক স্থানেও মায়ের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করে মাকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভধারণ করেছেন এবং দুই বছর দুগ্ধপান করিয়েছেন। ’ –সূরা লোকমান : ১৪

‘তার জননী তাকে কষ্ট সহকারে গর্ভধারণ করেছেন এবং কষ্ট সহকারে প্রসব করেছেন। তাকে গর্ভেধারণ করতে ও স্তন্যছাড়তে সময় লেগেছে ত্রিশ মাস। ’ -সূরা আহকাফ : ১৫

উল্লেথিক আয়াত দু’টোতে বিশেষতঃ মায়ের কষ্টের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। নয় মাস ধরে গর্ভেধারণ, অপরিসীম কষ্টের সাথে সন্তান প্রসব করণ এবং গর্ভধারণ ও বুকের দুধ খাওয়ানোতে ত্রিশ মাস কাটানো এ ধরনের কষ্টের বদলা দেয়া সন্তানের পক্ষে অসম্ভব।

কোনো ব্যক্তি মাকে পিঠে বহন করে হজ সম্পাদন করালেও তার বদলা পরিশোধ হবে না। এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, জনৈক ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর দরবারে হাজির হয়ে অভিযোগ করল যে, তার মা বদমেজাজের। রাসূল (সা.) বললেন, নয় মাস পর্যন্ত অব্যাহতভাবে যখন তিনি পেটে ধারণ করে ঘুরছে তখন তো তিনি বদমেজাজের ছিলেন না। লোকটি বলল, হুজুর আমি সত্যই বলছি, তিনি খারাপ মেজাজের। হুজুর (সা.) বললেন, তোমার জন্য যখন তিনি রাতের পর রাত জাগ্রত থেকেছেন এবং তোমাকে দুধ পান করিয়েছেন তখন তিনিতো বদমেজাজের ছিলেন না। সে ব্যক্তি বলল, আমি আমার মায়ের প্রতিদান দিয়ে ফেলেছি। রাসূল (সা.) বললেন, সত্যিই কি তার প্রতিদান দিয়ে ফেলেছো? জবাবে লোকটি বলল, আমি আমার মাকে কাঁধে চড়িয়ে হজ করিয়েছি। তখন রাসূল (সা.) এবার সিদ্ধান্তকারী রায় দিয়ে বললেন, ‘তুমি কি তার সে কষ্টের বদলা বা প্রতিদান দিতে পার যা তোমার ভূমিষ্ট হওয়ার সময় স্বীকার করেছেন? অর্থাৎ মাকে পিঠে করে হজ সম্পাদন করালেও ভূমিষ্ট হওয়ার সময়ে তার যে কষ্ট হয়েছে সেটার ন্যূনতম বদলা হবে না।

হাদিস থেকে আরো জানা যায় যে, নামাজ চালিয়ে যাওয়া থেকে মায়ের ডাকে সাড়া দেয়া উত্তম কাজ। ইসলামে মা হিসেবে নারীকে যে সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে দুনিয়ার অপর কোনো সম্মান বা মর্যাদার সাথে তার তুলনা চলে না।

মায়ের সেবা-যত্ন না করলে, মাকে কষ্ট ও দুঃখ দিলে সন্তান যতই ইবাদত-বন্দেগি আর নেকের কাজ করুক না কেন, তার পক্ষে বেহেশত লাভ করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (সা.)-এর সময় ‘আলকামা’ নামক এক যুবক কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়। তার রোগ ক্রমশঃ বৃদ্ধি পেতে থাকে। শয্যাপাশে উপস্থিত সেবা-শুশ্রুষাকারীরা জীবনের অন্তিম সময় ভেবে তাকে কালেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ করার উপদেশ দিতে থাকে। কিন্তু শত চেষ্টা করেও সে তা উচ্চারণ করতে পারে না। রাসূল (সা.) এ আর্শ্চয ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে জিজ্ঞাসা করলেন, তার মা কি জীবিত আছে? বলা হলো তার পিতা মারা গেছে তার মা জীবিত আছে। অবশ্য সে খুবই বয়োবৃদ্ধ। তখন তাকে রাসূল (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত করা হলো। তার নিকট তার ছেলের কথা উল্লেখ করে এর কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাস করা হলো। সে বলল, আলকামা বড় নামাজী, বড় রোজাদার ব্যক্তি এবং বড়ই দানশীল। সে যে কত দান করে তার পরিমাণ কারো জানা নেই। রাসূলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞাস করলেন, তোমার সাথে তার সম্পর্ক কেমন? উত্তরে বৃদ্ধা মা বলল, আমি ওর প্রতি খুবই অসন্তুষ্ট। তার কারণ জিজ্ঞাসা করায় সে বলল, সে আমার তুলনায় তার স্ত্রীর মন যোগাত বেশি, আমার ওপর তাকেই বেশি অগ্রাধিকার দিত এবং তার কথা মতো কাজ করতো। রাসূল (সা.) বললেন, ঠিক এ কারণেই আল্লাহতায়ালা তার মুখে কালেমার উচ্চারণ বন্ধ করে দিয়েছেন। অতঃপর রাসূল (সা.) হজরত বিলাল (রা.)কে আগুনের একটি কুণ্ডুলী জ্বালাতে বললেন এবং তাতে আলকামাকে নিক্ষেপ করার আদেশ করলেন। আলকামার মা এ কথা শুনে বলল, আমি মা হয়ে তা কেমন করে হতে দিতে পারি! সে যে আমার সন্তান, আমার কলিজার টুকরা। এবার রাসূলে কারিম (সা.) বললেন, তুমি যদি চাও যে, আল্লাহ তাকে মাফ করে দিন তাহলে তুমি তার প্রতি খুশি হয়ে যাও। অন্যথায় আল্লাহর শপথ, তার নামাজ, রোজা ও দান-খয়রাতের কোনো মূল্যই হবে না আল্লাহর দরবারে। অতঃপর আলকামার মা বলল, আমি আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি তাকে মাফ করে দিলাম। এরপর খবর নিয়ে জানা গেল যে, আলকামা অতি সহজেই কালেমা উচ্চারণ করতে সমর্থ হয়েছে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এ হাদিস প্রমাণ করে মায়ের মনে এতটুকু কষ্ট কত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। হাদিসের এ ঘটনা মায়ের মর্যাদাকে বাড়িয়ে আরো শক্তিশালী করেছে।

মায়ের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নবী করিম (সা.)-এর ভূমিকা বিশ্বের ইতিহাসে অমর হয়ে আছে। তিনি মায়ের স্নেহ-মমতার সুযোগ না পেলেও দুধ মা হালিমার স্নেহ-মমতা ভুলেননি। নবী করিম (সা.)-এর অন্তরের মণিকোঠায় ছিল মা হালিমার স্থান। তাই চল্লিশ বছরের বেশি বয়সেও তাকে মা, মা বলে ডাকতে শুনা যেত। নিজের গায়ের চাদরটি খুলে বিছিয়ে তার বসার স্থান করে দিতে দেখা যেত।

বস্তুত মা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত। ইসলাম মাকে যথাযথ মর্যাদা ও মূল্যায়ন করেছেন। ইসলাম মনে করে মায়ের মর্যাদা ও সম্মানকে বিশেষ দিনে আবদ্ধ না করে ইসলাম প্রদত্ত মর্যাদা ও সম্মানের আলোকে সারা জীবন প্রত্যেকেই নিজ নিজ জন্মদাত্রী মায়ের সেবা-যত্ন ও সম্মান করুক, মর্যাদা দিক।
thumb_up_off_alt 0 পছন্দ thumb_down_off_alt 0 জনের অপছন্দ

392,494 টি প্রশ্ন

384,185 টি উত্তর

137 টি মন্তব্য

1,299 জন সদস্য

489 অ্যাক্টিভ ইউজার
0 সদস্য 489 অতিথি
আজ ভিজিট : 92932
গতকাল ভিজিট : 159469
সর্বমোট ভিজিট : 86950086
এখানে প্রকাশিত প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোনপ্রকার আইনি সমস্যা সবজানো.কম বহন করবে না৷
...