সঠিক উত্তর হচ্ছে: বোমাং রাজা
ব্যাখ্যা: বোমাং রাজা বোমাংগ্রী বান্দরবান এর বোমাং সার্কেলের সার্কেল চীফ, যা চিটাগাং হিল ট্রাক্টস রেগুলেসন ১৯০০ আইন বা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিধিমালা, ১৯০০ এর ক্ষমতাবলে সৃষ্ট পদ, যা বয়ঃজ্যেষ্ঠতার এবং আর্থিক সামর্থ্যের উপর ভিত্তি করে মারমা জাতিসত্তার এক বিশেষ পরিবারের পুরুষগণ নির্বাচিত হন। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বোমাং সার্কেল,চাকমা সার্কেল, ও মং সার্কেল নামে তিনটি সার্কেলে প্রশাসনিকভাবে বিভাজিত যার শেষোক্ত দুটি যথাক্রমে চাকমা ও মারমা সম্প্রদায় হতে আসা বংশানুক্রমিক সার্কেল প্রধান বা গোত্রপতিদের দ্বারা শাসিত হতো।[১][২] অবশ্য পুর্বে রাজ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী নিয়ে বিরোধ থাকলেও এ.এস. প্রু চৌধুরী বনাম কে.এস. প্রু চৌধুরী [১৯৯৮] ৬ বি.এল.ডি (এ.ডি.) ১০৯ এর মাধ্যমে এর নিরোধ হয়। বর্তমানে ১৭তম রাজা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রাজ পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি বোমাংগ্রী উ চ প্রু ।
\nএই রাজাদের শাসন ব্যবস্থা যতটা না বাস্তবিক অর্থে, তার চেয়ে বেশি প্রতীকী। প্রতীকী অর্থে এই কারণে যে, রাজা হলেও ইতিহাস কিংবা রূপকথার রাজাদের মতো তাদের রাজত্ব এবং সৈন্য-সামন্ত নেই। প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই, নেই তেমন আয়-রোজগারও। স্থানীয় অধিবাসীদের কাছ থেকে সরকারের পক্ষে ট্যাক্স আদায় করাই তাদের মূল দায়িত্ব। একই সাথে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীগুলোর সামাজিক বিচার-শালিস করার দায়িত্বও তাদের। উচ্চ শিক্ষিত এবং আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এর প্রয়োজনীয়তা ফিকে হয়ে এলেও পার্বত্য তিন জেলায় টিকে আছে এই প্রতীকী রাজপ্রথা। প্রতীকী হলেও পার্বত্য দুর্গম অঞ্চলের কোনো কোনো মানুষের কাছে এখনও রাজাই সবকিছু। বিশেষ করে বান্দরবান জেলার দুর্গম অঞ্চলের পাহাড়ী জনগোষ্ঠীগুলোর ক্ষেত্রে এটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া রাজকীয় অনুষ্ঠান রাজপুণ্যাহ (প্রজাদের কাছ থেকে বাৎসরিক ট্যাক্স আদায় অনুষ্ঠান) নিয়মিত আয়োজন করায় বান্দরবানের বোমাং রাজার সাথে প্রজাদের তাৎপর্যপূর্ণ যোগাযোগ এখনও বিদ্যমান রয়েছে।