menu search
আমাদের সাইটে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ | প্রশ্ন এবং উত্তর প্রদান করে আমাদের সাইট থেকে আয় করতে পারবেন | তাই দেরি না করে এখনই একাউন্ট করেন |
more_vert
thumb_up_off_alt 0 পছন্দ thumb_down_off_alt 0 জনের অপছন্দ

1 উত্তর

more_vert

শাহিদ হাতিমী : মানুষের পরিচয় কি? উত্তরটা একটু বিশ্লেষিতভাবেই উদৃত হোক। মানুষের পরিচয় জানার আগে মনুষ্য জাতির জানা উচিত মানব সৃষ্টির আগে কী সৃষ্টি হয়েছিল? এও জানা উচিত যে, মানবদেহে প্রাণটা স্থাপিত হওয়ার বা সৃষ্টির আগে কোথায় ছিল? তখন কি আমাদের পরিচয় মানুষই ছিল? নাকি অন্য কোনো শিরোনামে অবহিত করা হতো? আর এ ক্ষেত্রে জানা আবশ্যক রুহ বা আত্মার বিষয়। কেননা মানব সৃষ্টির আড়াই হাজার বছরপূর্বে রুহ সৃষ্টি হয়েছে বলে উদৃত আছে। তাহলে আপনা থেকেই প্রশ্ন জাগে ‘রুহ’ কি? রুহের সঙ্গে দেহের সম্পর্ক কি? রুহ নশ্বর না অবিনশ্বর? রুহের সঙ্গে নাফসের সম্পর্ক কি? রুহ আগে সৃষ্টি হয়েছে নাকি দেহ আগে সৃষ্টি হয়েছে? মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে রুহের অবস্থান কোথায় থাকবে? এসব বিষয়ে জানার কৌতূহল ও আগ্রহ মানুষ বলতেই আছে। তাই যুগ যুগ ধরে মানুষ রুহের হাকীকত ও রহস্য সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারণা ও গবেষণা করে আসছে।
বাংলা ভাষায় ‘রুহ’কে আত্মা বলে। আরবিতে কখনো ‘কলব’ কখনো ‘নফস’ ব্যবহার হয়েছে। ইংরেজিতে বলা হয় ংড়ঁষ, রসসড়ৎঃধষ ঢ়ধৎঃ ড়ভ ঃযব নড়ফু, বমড় ইত্যাদি। আমরা যদি আত্মাকে আরেকটু ব্যাপৃত করি তাহলে ‘রুহ’র অর্থ দাঁড়ায়Ñ দেহবিশিষ্ট, চৈতন্যময়, সত্তা, অধিদেবতা, স্বরূপে স্বয়ং, অন্তর্নিহিত শক্তি, প্রাণের মধ্যবিন্দু, কেন্দ্রবিন্দু, প্রাণকে চঞ্চল করে তোলে এমন উজ্জীবক, গভীর অনুভূতিকে জাগ্রত করে এমন শিরোনাম। উল্লিখিত আলোকপাতে প্রশ্ন উদয় হয় আত্মা কি? আত্মা বিষয়ক আলোচনা মহাগ্রন্থ আল কোরআনে একাধিকবার যেমন উত্থাপন হয়েছে, তেমন বাইবেলেও উল্লেখ রয়েছে। যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওতায়ালা বলেন, “এবং তাতে আমার ‘রুহ’ থেকে ফুঁক দেব” [সুরায়ে হিজর : ২৯]। বাইবেলে উল্লেখ রয়েছে ‘আর তিনি তোমাদের কাছে চিরকাল থাকবার জন্য আরো একজন সাহায্যকারী পাঠিয়ে দেবেন। আর সে সাহায্যকারীই সত্যের রুহ’’ [যোহন-১৪ : ১৬, ১৭] দার্শনিক এবং বৈজ্ঞানিকদের মতে, রুহ বা আত্মা তিন ধরনের হয়। (১) রুহে হায়াতি : এ রুহ বা আত্মার অবস্থান হৃৎপি-ে, এর সাথে মানুষের জীবন এবং তার স্বস্তি ও সুস্থতা সম্পর্কিত। (২) রুহে তবয়ী : এ রুহ বা আত্মার অবস্থান রক্ত, এ আত্মা মানুষের শক্তি, সামর্থ্য এবং কর্মক্ষমতা সংশ্লিষ্ট। (৩) রুহে নাফসানি : এ রুহ বা আত্মার অবস্থান মাথা। এই রুহ হলো অনুভূতি এবং চেতনার মূল।
মনোবিজ্ঞানের ভাষায় ‘মন’কে আত্মা বলা হয়। বুৎপত্তিগত অর্থে যা পূর্ব অভিজ্ঞতায় স্মরণ রাখতে পারে তাই হলাে ‘আত্মা’। কেউ কেউ বলেছেন, মানবদেহে যে প্রবাহমান রক্ত আছে সেই রক্ত হলো ‘রুহ’ বা আত্মা। এবার জেনে নিতে পারি যুগশ্রেষ্ঠ মনীষীরা “রুহ’’ বা আত্মাকে কীভাবে সঙ্গায়িত করেছেন। মানব গবেষক আবুল হায়সাম বলেনÑ “আত্মা এমন বিষয় যার মাধ্যমে মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহণ করে। যা মানুষের ভেতর হতে বের হয়ে গেলে মানুষ মারা যাবে’’।
বিশ্বখ্যাত গবেষক আল-ফারাবীর মতেÑ “আত্মা হলো এমন বস্তু যার উপর মানুষের জীবন নির্ভরশীল’’। যুগশ্রেষ্ঠ দার্শনিক ইমাম গাযযালী বলেনÑ “আত্মা হলো মানুষের দেহ সংশ্লিষ্ট এবং দেহোত্তীর্ণ আধ্যাত্মিক সত্তা’’। সুচিন্তক গবেষক ইবনুল আরাবীর মতেÑ “আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভের উপায় এবং মাধ্যম হলো আত্মা’’। আল্লামা ইকবাল বলেনÑ “আত্মা হলো এক ধরনের বাস্তব সত্তা, যাকে অতীন্দ্রীয় অনুভূতির মাধ্যমে জানা যায়’’। মনীষীদের সারকথা হলো “আত্মা এমন এক বিষয় যা চিরন্তন, অমর, অবিনশ্বর, অদৃশ্য এবং সর্বত্র বিরাজমান এবং যা মানুষের প্রাণশক্তিকে সঞ্চারিত করে’’।
ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী রুহ বা আত্মাকে তিনটি শিরোনামে আখ্যায়িত তথা ভাগ করা হয়েছে। যথাঃÑ লাওয়ামা, আম্মারা এবং মুতমাইন্না। অবশ্য পবিত্র আল কোরআনেও এ তিন প্রকারের কথা উল্লেখ হয়েছে। আর ইসলামিক স্কলারগণ নফস বা আত্মার উল্লেখিত তিন প্রকারের সম্পূরক তিনটি স্তরও উদৃত করেছেন। যথাক্রমেÑ (১) রুহে আযীম, (২) রুহে কুদ্দুস এবং (৩) রুহে নফস। এখানে আরেকটি বিষয় প্রাণিধানযোগ্য-রুহ, ংড়ঁষ, কলব যেটাই বলেন আত্মাকে আত্মশুদ্ধ করার একটি বিশেষ পদ্ধতি আছে! যা হক্কানী পীর বুজুর্গ বা উলামায়ে কেরামগণ যুগ যুগ যাবত করে আসছেন। আর সেটাকে আরবি ভাষায় বলা হয় ‘তাযকিরাতুন নফস’। যার বাংলা ‘আত্মশুদ্ধি’ এখানে তাযকিরাতুন কথাটি যায়িয়ূন হতে নির্গত হয়েছে যার এককথায় অর্থ হলো শুদ্ধ, পবিত্র, নিষ্পাপ বা ইসলাহ, অর্থাৎ আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা, পাক করা, উদ্বুদ্ধ করা ও উন্নত করা। বলাবাহুল্য, মানুষের একটা ফিতরত হচ্ছে গোনাহের কর্মে ঝুঁকে পড়া! অবশ্য এটা শয়তানের প্ররোচণায়ই ঘটে থাকে। এইযে দেখুনÑ কেউবা মদ, ফেনসিডিল, ইয়াবা জাতীয় নেশাজাতদ্রব্য পান করে গোনাহে লিপ্ত! কেউবা নারীসঙ্গে মত্ত হয়ে যৌন চাহিদা পূরণে যিনার মতো পাপাচারে উন্মাদ ব্যস্ত! কেউবা অর্থবিত্ত ধনসম্পদের অঢেল পাহাড় গড়ার জন্য দেদারছে করছে গরিবের জমি দখল, ব্যবসায় দুর্নীতি, রাহাজানি, চাঁদাবাজি, ডাকাতিসহ কুকর্ম ও ধিক্কিত গোনাহের কাজ! কেউবা করছে অবলীলায় ক্ষমতার অপব্যবহার!! গোনাহের কর্মে লিপ্ত মানুষ নামের আমাদের এই হতভাগা নারী-পুরুষেরা অনেকটা জেনেও থামছে না! না মেনে, না থেমে, না ভেবে সামান্য সময়ের ক্ষণস্থায়ী মজালাগা এই পাপকর্মগুলো চালিয়েই যাচ্ছে! তারা ভুলে যায় মৃত্যু আমাদের কাউকেই রেহাই দেবে না! অথচ আমরা তারা অচিরেই পাড়ি জমাব চিরকালীন জগতে, পরকালের অনন্ত জীবনে! যে জীবনের শুরু আছে কিন্তুু শেষ নেই!! যে জীবনে রয়েছে মাত্র দুটি পথ, (১) জান্নাত (২) জাহান্নাম।

thumb_up_off_alt 0 পছন্দ thumb_down_off_alt 0 জনের অপছন্দ

392,498 টি প্রশ্ন

384,191 টি উত্তর

137 টি মন্তব্য

1,314 জন সদস্য

333 অ্যাক্টিভ ইউজার
0 সদস্য 333 অতিথি
আজ ভিজিট : 38654
গতকাল ভিজিট : 178407
সর্বমোট ভিজিট : 95232761
এখানে প্রকাশিত প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোনপ্রকার আইনি সমস্যা সবজানো.কম বহন করবে না৷
...