'আমি' এই 'শরীর' নই, আমি মন নই, আমি বুদ্ধি নই, আমি আত্মা। এর প্রমাণ আমরা ভগবদগীতা আদি শাস্ত্র গ্রন্থ থেকে পেয়ে থাকি। গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে, "জীবের আসল স্বরূপ হচ্ছে সে চিন্ময় আত্মা, এবং আমার নিত্য সনাতন অংশ"। কেউ যদি একটি শিশুকে দুই বছর বা এক বছর বয়সে তাকে দেখে এবং ৪০ বছর বয়সে তাকে দেখে তাহলে সে দেখবে যে ইতিমধ্যে শিশুটির রূপ সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়েছে, তার দেহের, মনের, বুদ্ধির পরিবর্তন হয়েছে। তবুও সেই লোকটি একই লোক অর্থাৎ তার মধ্যে একটিই সত্তা রয়েছে, যার পরিবর্তন হয় না। সেইটিই হচ্ছে আত্মা, সেটিই হচ্ছে জীবের আসল স্বরূপ, ব্যক্তিত্বের কেন্দ্র। আর একটি প্রমাণ হচ্ছে - ধরুন আপনার দিদিমা বাড়ীতে শুয়ে আছেন দেখে আপনি বাজার করতে গিয়েছেন। বাজারে আপনি শুনতে পেলেন যে আপনার দিদিমা মারা গেছেন। বাড়ী ফিরে এসে দেখছেন বাজার যাওয়ার আগে দিদিমা যেভাবে খাটের উপর শুয়ে ছিলেন এখনও ঠিক সেই রকম ভাবেই শুয়ে আছেন এবং তাঁর চার পাশে ঘিরে আপনার বাবা বলছেন, "ও আমার মা চলে গেলে" - ভাই বলছে, "দিদিমা চলে গেল" ইত্যাদি। আপনি দেখতে পাচ্ছেন আপনার দিদিমা খাটে শুয়ে আছে, আবার সবাই চিৎকার করছে, 'মা চলে গেল' দিদিমা চলে গেল' ইত্যাদি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে - কে চলে গেল? সেইটাই হচ্ছে আত্মা। আত্মা চলে গেলে শরীর জড় অবস্থা প্রাপ্ত হয়। শরীরে কোন চেতনার লক্ষণ দেখা যায় না, অর্থাৎ শরীরটা অচেতন হয়ে যায়। এর থেকে আমরা বুঝতে পারি যে আমি এই 'দেহ' নই 'মন' নই-- আমি হচ্ছি চিন্ময় 'আত্মা'।