সঠিক উত্তর হচ্ছে: রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
ব্যাখ্যা: জন্ম ও পরিবার ১৮২৭ সালে মাতুলালয়, বাকুলিয়া গ্রাম, বর্ধমানে জন্ম। তার আদি নিবাস বর্তমান হুগলি জেলার বাকুলিয়া। তার পিতার নাম রামনারায়ণ। পিতা মারা যাবার পড়ে মাতুলালয়ে লালিত-পালিত হন। শিক্ষাজীবন রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় বাকুলিয়ার স্থানীয় পাঠশালা ও মিশনারী স্কুলে শিক্ষাশেষে হুগলি মহসিন কলেজে কিছুদিন পড়াশোনা করেন। ইংরেজি, সংস্কৃত এবং প্রাচীন ওড়িয়া কাব্য ও সাহিত্যে তার জ্ঞান ছিল। কর্মজীবন কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সাহায্যে সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় তিনি সাহিত্য রচনা আরম্ভ করেন। ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত এডুকেশন গেজেট পত্রিকার সহঃ-সম্পাদক ছিলেন। সেই সময়ের এডুকেশন গেজেটে তার গদ্য এবং পদ্য দুই রকম রচনাই প্রকাশিত হত। ১৮৫২ সালে প্রকাশিত \'মাসিক সংবাদসাগর\' ও ১৮৫৬ সালে প্রকাশিত সাপ্তাহিক \'বার্তাবহ\' পত্রিকা দুটোতে তিনি সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ৬ মাস অধ্যাপনা করবার পর আয়কর অ্যাসেসর এবং ডেপুটি কালেক্টর হন। তারপর ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে সুনামের সাথে চাকরি করে ১১ এপ্রিল ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে অবসর নেন। রচনাসমগ্র তিনি মূলত স্বদেশপ্রেমিক কবিরূপে বিখ্যাত। তার রচিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মিনী উপাখ্যান, কর্মদেবী এবং শূরসুন্দরী। টডের অ্যানাল্স্ অফ রাজস্থান থেকে কাহিনীর অংশ নিয়ে তিনি পদ্মিনী উপাখ্যান রচনা করেন। তার মৃত্যুর পর স্বদেশী যুগের বিপ্লবীদের মধ্যে পদ্মিনী উপাখ্যানের অংশ - স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় \" খুবই বিখ্যাত ছিল। তিনি ১৮৭২ সালে কালিদাসের সংস্কৃত কুমারসম্ভব ও ঋতুসংহারের পদ্যানুবাদ করেছিলেন। একই বছরে প্রকাশিত নীতিকুসুমাঞ্জলি তার অপর পুস্তিকা, যা সংস্কৃত নীতি ও তত্ত্বমূলক কবিতার অনুবাদ। ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে রচিত কাঞ্চী কাবেরী কাব্যগ্রন্থ প্রাচীন ওড়িয়া কাব্যের অনুসরণে লিখিত। রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় \'উৎকল দর্পণ\' নামে উড়িয়া ভাষায়ও একটি সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। উৎকল দর্পণ নামে সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। \'উৎকল দর্পণ\'-এ তিনি উরিষ্যার পুরাতত্ব ও উড়িয়া ভাষা সম্পর্কে অনেক প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তার কলিকাতা কল্পলতা গ্রন্থটিই সম্ভবত বাংলা ভাষায় প্রথম কলকাতার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস। ইংরেজি প্রভাবিত বাংলা সাহিত্যের তিনি অন্যতম পথপ্রদর্শক।