হস্তমৈথুন
হস্তমৈথুন অর্থাৎ হাত দ্বারা যৌনাঙ্গ হতে বীর্যপাত ঘটানো, যাকে ভুলক বলা হয়। এর অপর নাম নেকাহে বালীদ অর্থাৎ হাতের মাধ্যমে বিবাহ করা। হস্তমৈথুন এটি খুবই বদ অভ্যাস। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হস্তমৈথুর করে বীর্যপাত করানো হারাম। এটা মাত্রাতিরিক্ত সহবাসের চেয়ে ক্ষতিকর। হস্তমৈথুনের ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া সারা শরীরে বিস্তার করে। সাথে সাথে ক্ষতিকারক অনেক রোগও দেখা দেয়। বিশেষ করে, অন্তর, মস্তিষ্ক, যৌনাঙ্গ একেবারে বিকল হয়ে যায়। যে ব্যক্তির এ বিশেষ অঙ্গটি দুর্বল ও বাদ পড়ে যাবে, বুঝাই যায় যে, তার জীবনের কত বড় ক্ষতি হয়। এমন ক্ষতি, শত আফসোস করেও তা আর পূর্বাবস্থায় আনা যায় না। এ খারাপ অভ্যাসটি সব বয়সেই হতে পারে। আর যে ব্যক্তি এ অভ্যাসে অভ্যন্ত হয়ে যায়, তারা এটি করা ছাড়া থাকতে পারে না।
এ বদঅভ্যাসের ক্ষতিকর দিক
এ বদঅভ্যাসে লিপ্ত ব্যক্তির চেহারার উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। তার চেহারায় হালত এমন হয় যে, আয়নায় নিজের চেহারা দেখতেও ভয় পায়। তাকে দেখলে মনে হয়ে, না জানি সে কত গভীর চিন্তায় বিভোর। মস্তিষ্কের শক্তি চলে যাওয়ার সাথে সাথে শরীরও দুর্বল ও ক্ষীণ হয়ে যায়।
হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর দিক
হস্তমৈথুন অভ্যাসটি খুবই খারাপ অভ্যাস। এ অভ্যাসে লিপ্ত ব্যক্তি অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। হস্তমৈথুনের সময় যৌনাঙ্গে হাতের ঘর্ষণ বা ডলাডলির কারণে যৌনাঙ্গের শিরা শিথিল হয়ে যায়। অনেক সময় এর কারণেই যৌনাঙ্গ বাঁকা এবং শিথিল হয়ে যায়। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির যৌনাঙ্গ উত্তেজনার সময় খুব শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে না। অনেক সময় এ বদ অভ্যাসের কারণে লিঙ্গের আগা বা গোড়া চিকন কিংবা মোটা হয়ে যায় এবং লম্বায় ছোট হয়ে যায়। পেশাবের সময় পেশাবও সোজা না গিয়ে ডানে বামে যে কোনো একদিকে যেতে থাকে। আগা কিংবা গোড়া চিকন মোটা যাই হক, উভয়টিই তার জন্য খুবই ক্ষতিকর। যৌনাঙ্গে ঘর্ষণ কিংবা ডলাডলির কারণে তার শিরায় রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যৌন উত্তেজনা অতি তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। পেশাবের সময় জ্বলন অনুভব হয়। বেশি বেশি স্বপ্নদোষ হয়। ক্রমান্বয়ে যৌনশক্তি কমতে থাকে। দুর্বলতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। যদি এ রোগের চিকিৎসা করা না হয় এবং সবসময় এ অভ্যাসটি চালিয়ে যেতে থাকে। তাহলে তার অন্তর, দেমাগ, মস্তিষ্ক, যকৃৎ, পার্শ্ব অর্থাৎ পাঁজর, হৃৎপিণ্ড সব তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যাবে। সব সময় মেজাজ থাকবে গরম। কোনো কিছুই তার কাছে ভালো লাগবে না। ভালো রক্ত তৈরী হবে না। চর্বি গলে পেশাবের সাথে বের হয়ে যাবে। শরীরের সকল অঙ্গে অস্বাভাবিক দুর্বলতা অনুভব হতে থাকবে।
হস্তমৈথুনকারী ব্যক্তির পরিণতি
এ ধ্বংসাত্মক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কখনো কখনো মৃগী রোগ বা কাঁপুনী রোগে আক্রান্ত হয়। আবার কখনো কখনো টিবি রোগসহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। আল্লাহ্ পাক সকলকে এ বদ অভ্যাস থেকে হিফাজত করুন, আমীন ইয়া আরহামার রাহিমীন।
সবশেষে হস্তমৈথুনের বদ অভ্যাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তির বাস্তব জীবনের একটি ঘটনা দিয়ে কথা শেষ করছি। এর মাধ্যমেই বুঝতে পারবেন হস্তমৈথুন স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর।
একটি সত্য ঘটনা
জনৈক ব্যক্তি আমার নিকট (পুশিদাহ রাজ কিতাবের লেখক মুফতী আশরাফ আমরহবী দাঃ বাঃ এর নিকট) তার নিজের কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে বলতে লাগল, জনাব! আমি হস্তমৈথুন বদ অভ্যাসে জড়িয়ে পড়েছি। যখনই পেশাব বা পায়খানায় যাই, তখনই হস্তমৈথুন না করে আসতে পারি না। আবার অনেক সময় কেবল এ কাজ করার জন্যই একাধিকবার পায়খানায় যাই। শেষ পর্যন্ত আমার অবস্থা এমন হয়েছে যে, এখন অনেক সময় পেশাবের সাথে সাথে রক্ত আসে। আবার অনেক সময় শুধু রক্ত আসে। রক্ত দেখে আমার উপলব্ধি হয়েছে যে, আমি কত বড় পাপে লিপ্ত হয়েছি। আমার অবস্থা এমন হয়েছে যে, কেউ যদি আমার জন্য কবর খনন করে, তাহলে সেথায় গিয়ে মৃত্যুবরণ করি।
(আল্লাহ্ পাক সকলকে হিফাজত করুন, আমীন ইয়া আরহামার রাহিমীন।)